প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ ২য় ধাপের পরীক্ষা আগামী ২০ মে ২০২২ অনুষ্ঠিত হবে। এই নিয়োগ পরীক্ষার জন্য গণিত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আজ আমরা গণিতের কিছু বেসিক প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো।
গণিতের বেসিক থেকে কিছু প্রশ্ন প্রায় সব চাকরির পরীক্ষায় থাকে। তাই যারা গণিত নিয়ে খুব চিন্তায় থাকেন তারা এই বিষয়গুলো ভালো করে লক্ষ্য রাখুন।
প্যাটার্ন
বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি নানারকম প্যাটার্নে ভরপুর। প্যাটার্ন আমাদের জীবনের সঙ্গে জুড়ে আছে নানা ভাবে। গণিতে প্যাটার্ন বলতে বোঝায় নির্দিষ্ট পন্থায় বিভিন্ন বস্তু বা সংখ্যার সমাবেশ বা বিন্যস্ত করা। প্যাটার্ন যেকোনো গাণিতিক বিশ্লেষণকে সহজবোধ্য ও অপেক্ষাকৃত সহজতর করে তোলে।
১, ৪, ৭, ১০, ১৩, …………. সংখ্যাগুলোতে একটি প্যাটার্র্ন বিদ্যমান। সংখ্যাগুলো ১ থেকে শুরু করে প্রতিবার ৩ যোগ করতে হবে। অন্য একটি উদাহরণ : ২, ৪, ৮, ১৬, ৩২, …….. লক্ষ করলে দেখা যায় পরবর্তী সংখ্যাটি পূর্বসংখ্যার দ্বিগুণ।
স্বাভাবিক ক্রমিক সংখ্যার যোগফল নির্ণয় :
‘ক’ সংখ্যক ক্রমিক সংখ্যার যোগফল
ক = (প্রথম সংখ্যা + শেষ সংখ্যা) পদ সংখ্যা ২
‘ক’ সংখ্যক ক্রমিক স্বাভাবিক বিজোড় সংখ্যার যোগফল (ক)২।
সংখ্যাকে দুইটি বর্গের সমষ্টিরূপে প্রকাশ
কিছু সংখ্যা রয়েছে যেগুলোকে দুইটি বর্গের সমষ্টিরূপে
প্রকাশ করা যায়। যেমন, ২ = ১ ২ + ১২, ৫ = ১২ + ২২
৮ = ২২ + ২২, ১০ = ১২ + ৩২, ১৩ = ২২ + ৩২ ইত্যাদি।
১ থেকে ১০০ এর মধ্যে ৩৪টি সংখ্যাকে দুইটি বর্গের যোগফল হিসেবে প্রকাশ করা যায়।
আবার কিছু স্বাভাবিক সংখ্যাকে দুই বা অধিক উপায়ে দুইটি বর্গের সমষ্টিরূপে প্রকাশ করা যায়। যেমন,
৫০ = ১২ + ৭২ = ৫২ + ৫২
৬৫ = ১২ + ৮২ = ৪২ + ৭২
ম্যাজিক বর্গ : ম্যাজিক বর্গ এমন একটি ছক যার দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে ঘর সংখ্যা সমান এবং যেকোনো ক্রমের ম্যাজিক বর্গের জন্য প্রাপ্ত সংখ্যাগুলোকে পাশাপাশি, উপর—নিচ, কোনাকুনি যোগ করলে যোগফল একই হবে। প্রাপ্ত যোগফল হবে ঐ ক্রমের ম্যাজিক সংখ্যা।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার গনিত সাজেশন
লাভ—ক্ষতি
যে মূল্যে পণ্য বিক্রয় করা হয় তা বিক্রয়মূল্য।
ক্রয়মূল্যের চেয়ে বিক্রয়মূল্য বেশি হলে লাভ বা মুনাফা হয়।
ক্রয়মূল্যের চেয়ে বিক্রয়মূল্য কম হলে লোকসান বা ক্ষতি হয়।
আমরা লিখতে পারি, লাভ = বিক্রয়মূল্য ক্রয়মূল্য
ক্ষতি = ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
তুলনার জন্য লাভ বা ক্ষতিকে শতকরা হিসেবেও প্রকাশ করা হয়।
লাভ বা ক্ষতি সবসময় ক্রয়মূল্যের ওপর হিসাব করা হয়।
মুনাফা
ব্যাংকে টাকা জমা রাখলে, কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে ধার দিলে বা ব্যবসায়ে খাটালে তার পরিমাণ এবং সময়ের ওপর নির্ভর করে ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান আমানতকারীকে কিছু অতিরিক্ত টাকা দেয়। এই টাকাই হচ্ছে আমানতকারীর প্রাপ্ত মুনাফা বা লভ্যাংশ।
ব্যাংকে যে টাকা জমা রাখা হয় বা ব্যবসায়ে খাটানো হয়, তাকে আসল বা মূলধন বলে।
কোনো নির্দিষ্ট টাকার কোনো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যে মুনাফা হয় তাকে মুনাফার হার বলে।
লক্ষ করি :
মুনাফার হার : ১০০ টাকার ১ বছরের মুনাফাকে মুনাফার হার বা শতকরা বার্ষিক মুনাফা বলা হয়।
সময়কাল : যে সময়ের জন্য মুনাফা হিসাব করা হয় তা এর সময়কাল।
সরল মুনাফা : প্রতিবছর শুধু প্রারম্ভিক মূলধনের ওপর যে মুনাফা হিসাব করা হয়, তাকে সরল মুনাফা (ঝরসঢ়ষব চৎড়ভরঃ) বলে। শুধু মুনাফা বলতে সরল মুনাফা বোঝায়।
সূত্রগুলো জেনে রাখ :
- মুনাফা = আসল × মুনাফার হার × সময়, ও I = Prn
- মুনাফা—আসল = আসল + মুনাফা,
- A = P + I = P + Prn = P(1 + rn)
- আসল = মুনাফা ÷ মুনাফার হার × সময়
- মুনাফার হার = মুনাফা ÷ আসল × সময়
- সময় = মুনাফা ÷ আসল × মুনাফার হার
পরিমাপ
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তুতি
বাংলাদেশে ১লা জুলাই,১৯৮২ সাল থেকে এ মেট্রিক পদ্ধতি চালু করা হয়। এখন দৈর্ঘ্য, ক্ষেত্রফল, ওজন ও তরল পদার্থের আয়তন প্রতিটি পরিমাপেই এ পদ্ধতি পুরোপুরি প্রচলিত রয়েছে। দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক মিটার।প্যারিস মিউজিয়ামে রক্ষিত এক খণ্ড ‘প্লাটিনামের রড’—এর দৈর্ঘ্য এক মিটার হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। দৈর্ঘে্যর একক মিটার থেকে মেট্রিক পদ্ধতি নামকরণ করা হয়েছে।
ওজন পরিমাপের একক গ্রাম। এটি মেট্রিক পদ্ধতির একক। তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপের একক লিটার। এটি মেট্রিক পদ্ধতির একক। গ্রিক ভাষায় ডেকা অর্থ ১০ গুণ, হেক্টো অর্থ ১০০ গুণ এবং কিলো অর্থ ১০০০ গুণ। ল্যাটিন ভাষায় ডেসি অর্থ দশমাংশ, সেন্টি অর্থ শতাংশ এবং মিলি অর্থ সহস্রাংশ।
বীজগণিতীয় সূত্রাবলি
বীজগণিতীয় প্রতীক দ্বারা প্রকাশিত যেকোনো সাধারণ নিয়ম বা সিদ্ধান্তকে বীজগণিতীয় সূত্র বা সংক্ষেপে সূত্র বলা হয়।
- (a + b)2 = a2 + 2ab + b2
- (a – b)2 = a2 – 2ab + b2
- a2 – b2 = (a + b) (a – b)
- (x + a) (x + b) = x2 + (a + b) x + ab
- a2 + b2 = (a + b )2 – 2ab
- a2 + b2 = (a – b )2 + 2ab
- (a + b)2 = (a – b)2 + 4ab
- (a – b)2 = (a + b)2 – 4ab
- 2(a2 + b2) = (a + b)2 + (a – b)2
- 4ab = (a + b)2 – (a – b)2
- (a + b + c)2 = a2 + b2 + c2 + 2ab + 2bc + 2ca
Basic Mathematics গণিত প্রস্তুতি
তথ্য ও উপাত্ত : সংখ্যাভিত্তিক কোনো তথ্য বা ঘটনা হচ্ছে একটি পরিসংখ্যান। আর তথ্য বা ঘটনা—নির্দেশক সংখ্যাগুলো হচ্ছে পরিসংখ্যানের একটি উপাত্ত। ধরা যাক, ৫০ নম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ২০ জন প্রার্থীর গণিতে প্রাপ্ত নম্বর হলো ২৫, ৪৫, ৪০, ২০, ৩৫, ৩০, ৩৫, ৩০, ৪০, ৪১, ৪৬, ২০, ২৫, ৩০, ৪৫, ৪২, ৪৫, ৪৭, ৫০, ৩০। এখানে, গণিতে প্রাপ্ত সংখ্যা—নির্দেশিত নম্বরসমূহ একটি পরিসংখ্যান। আর নম্বরগুলো হলো এ পরিসংখ্যানের উপাত্ত।
গণসংখ্যা নিবেশন সারণি : উপাত্তের গণসংখ্যা সারণি তৈরি করার জন্য যে কয়েকটি ধাপ ব্যবহার করতে হয় তা হলো :
(১) পরিসর নির্ণয়, (২) শ্রেণিসংখ্যা নির্ণয়, (৩) শ্রেণিব্যাপ্তি নির্ণয়, (৪) ট্যালি চিহ্নের সাহায্যে গণসংখ্যা নির্ণয়।
অনুসন্ধানাধীন উপাত্তের পরিসর = (সর্বোচ্চ সংখ্যা সর্বনিম্ন সংখ্যা) + ১।
শ্রেণিব্যাপ্তি : যেকোনো শ্রেণির ঊর্ধ্বসীমা ও নিম্নসীমার ব্যবধান হলো সেই শ্রেণির শ্রেণিব্যাপ্তি। উপাত্তগুলোকে সুবিধাজনক ব্যবধান নিয়ে কতকগুলো শ্রেণিতে ভাগ করা হয়।
গণিতের বেসিক
শ্রেণিসংখ্যা : শ্রেণিসংখ্যা হচ্ছে পরিসরকে যতগুলো শ্রেণিতে ভাগ করা হয় তার সংখ্যা।
অতএব, শ্রেণিসংখ্যা = পরিসরশ্রেণিব্যাপ্তি (পূর্ণসংখ্যায় রূপান্তরিত)।
ট্যালি চিহ্ন : উপাত্তের সংখ্যাসূচক তথ্যরাশির মান কোনো না কোনো শ্রেণিতে পড়ে। শ্রেণির বিপরীতে সাংখ্যিক মানের জন্য ট্যালি ‘ ‘ চিহ্ন দিতে হয়। কোনো শ্রেণিতে পাঁচটি ট্যালি চিহ্ন দিতে হলে চারটি দেওয়ার পর পঞ্চমটি আড়াআড়িভাবে দিতে হয়। যেমন : ‘ ‘
Primary Job Preparation 2022 গণিত
গণসংখ্যা : যে শ্রেণিতে যতগুলো ট্যালি চিহ্ন পড়বে তত হবে ঐ শ্রেণির গণসংখ্যা বা ঘটনসংখ্যা, যা ট্যালি চিহ্নের বিপরীতে গণসংখ্যা কলামে লেখা হয়।
লেখচিত্র : পরিসংখ্যানে ব্যবহৃত উপাত্ত লেখচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপিত হলে তা বোঝা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য খুব সুবিধাজনক হয়। তাই, বোঝা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুবিধার্থে উপাত্তসমূহের গণসংখ্যা নিবেশনের চিত্র লেখচিত্রের মাধ্যম উপস্থাপন করা হয়।
আয়তলেখ : গণসংখ্যা নিবেশনের একটি লেখচিত্র হচ্ছে আয়তলেখ। আয়তলেখ অঙ্কনের জন্য ছক কাগজে ঢ ও ণ—অক্ষ অঁাকা হয X—অক্ষ বরাবর শ্রেণিব্যাপ্তি এবং Y—অক্ষ বরাবর গণসংখ্যা নিয়ে আয়তলেখ অঁাকা হয়। আয়তের ভূমি হয় শ্রেণি ব্যাপ্তি এবং উচ্চতা হয় গণসংখ্যা।
পাইচিত্র : কোনো উপাত্তের লেখচিত্র যখন বৃত্তের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়, তখন সেই লেখচিত্রকে পাইচিত্র বলে। পাইচিত্রকে বৃত্তলেখও বলা হয়।
আমরা জানি, বৃত্তের কেন্দ্রে সৃষ্ট কোণের পরিমাণ ৩৬০। কোনো পরিসংখ্যান ৩৬০ এর অংশ হিসেবে উপস্থাপিত হলে তা হবে পাইচিত্র।
কেন্দ্রীয় প্রবণতা : পরিসংখ্যান সারিতে দেখা যায় যে, উপাত্তসমূহ মাঝামাঝি বা কেন্দ্রের মানের দিকে পুঞ্জিভূত হয়। মাঝামাঝি বা কেন্দ্রে মানের দিকে উপাত্তসমূহের পুঞ্জিভূত হওয়ার প্রবণতাকে কেন্দ্রীয় প্রবণতা বলে। কেন্দ্রীয় মান উপাত্তসমূহের প্রতিনিধিত্বকারী একটি সংখ্যা যার দ্বারা কেন্দ্রীয় প্রবণতা পরিমাপ করা হয়।
সাধারণভাবে, কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপ হলো (১) গাণিতিক গড় বা গড়, (২) মধ্যক, (৩) প্রচুরক।
Aslo Read-
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তুতি ২০২২
Primary Job Exam Suggestion 2022